‘হিন্দি বিন্দি’ সিনেমা দিয়ে বলিউডের সিনেমায় নাম লেখালেন তরুণ অভিনেত্রী রুপন্তী আকিদ। নির্মাতা আলী সায়েদ পরিচালিত এই সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
গত রোববার সিডনি থেকে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রুপন্তী জানান, সিডনিতেই সিনেমার বেশিরভাগ অংশের শুটিং হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে শুটিং শেষ করেছেন তিনি।
রুপন্তীর জন্ম, বেড়ে উঠা ও পড়াশোনা সিডনিতে। প্রায় এক দশক আগে শিশুশিল্পী হিসেবে টিভি নাটকে অভিষেক তাঁর। ধীরে ধীরে নায়িকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন এই শিল্পী।এবারই প্রথম বলিউডের কোনো সিনেমায় কাজ করলেন রুপন্তী; এতে ‘রিহানা’ নামের অস্ট্রেলীয় এক তরুণীর চরিত্র ধারণ করেছেন তিনি। ছবিটির সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনারা ‘রিহানা’ চরিত্রে এমন একজনকে খুঁজছিলেন, যিনি অস্ট্রেলিয়ার উচ্চারণে কথা বলতে পারেন। সঙ্গে ভাঙা ভাঙা হিন্দিও বলতে পারেন।
অডিশনের খবর পেয়ে চরিত্রটির জন্য আবেদন করেছিলেন। কয়েক দফায় অনলাইনে অডিশন দিয়েছেন। এরপর সামনাসামনি অডিশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হয় তাঁকে।
সিনেমার মূল তিনটি চরিত্রের একটি করছেন এই তরুণ শিল্পী। বাকি দুই চরিত্রে রয়েছেন নীনা গুপ্তা ও মিহির আহুজা। নীনা গুপ্তার মতো শিল্পীর সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়ে আপ্লুত রুপন্তী।
‘আমি নীনা গুপ্তার অনেক বড় ভক্ত, উনি ভীষণ পেশাদার একজন শিল্পী। ওনার কাছে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছি,’ বলেন রুপন্তী।
সিনেমাটি এ বছরই ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে।
‘মিলি’ চরিত্রে প্রশংসা মিলছে
নির্মাতা শিহাব শাহীন পরিচালিত চরকির অরিজিনাল সিনেমা ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’–তে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন রুপন্তী। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমায় সিডনিতে বেড়ে ওঠা বাঙালি তরুণী ‘মিলি’ চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করেছেন তিনি।
তবে ‘মিলি’ চরিত্রটা নাকি প্রথমে করতেই চাননি রুপন্তী। তাঁর ভাষ্য, তিনি একদমই মিলির মতো একরোখা নন, শান্ত স্বভাবের। মিলির মতো চরিত্র সিডনিতে মেলে না বললেই চলে।
ফলে চরিত্রটা ধারণের জন্য তেমন কোনো রেফারেন্স পাননি রুপন্তী। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার বন্ধুদের মধ্যেও এমন চরিত্রের কাউকে পাইনি। ফলে সিনেমা দেখে রেফারেন্স খোঁজার চেষ্টা করেছি।’
রুপন্তী বলেন, ‘বাংলাদেশের দর্শকদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। কাজটা নাকি ওখানে খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমার পরিবারও কাজটা দেখে খুব খুশি হয়েছে। পরিবারের সমর্থনেই আমি এতদূর এসেছি।’
এই সিনেমায় প্রীতম হাসান, তাসনিয়া ফারিণসহ অনেকে অভিনয় করেছেন।
শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা
রুপন্তীর বাবা আকিদুল ইসলাম একজন চিত্রনাট্যকার, মা আবিদা রুচি একসময় বরগুনায় মঞ্চে কাজ করেছেন। বিয়ের পর এই দম্পতি সিডনিতে পাড়ি জমান; সেখানেই রুপন্তীর জন্ম।
২০১৩ সালে নির্মাতা সাগর জাহানের ‘আংটি’ নাটক দিয়ে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয়ে নাম লেখান রুপন্তী। শৈশবে সিডনিতে তারিন, জয়া আহসান, দীপা খন্দকারদের শুটিং দেখে বেড়ে উঠেছেন; তাঁদের দেখেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহের সূচনা।
এক দশকের ক্যারিয়ারে ‘হ্যালো বাংলাদেশ’, ‘কেবলই রাত হয়ে যায়’, ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’–এর মতো নাটকে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন রুপন্তী। ক্রমেই শিশুশিল্পীর তকমা ভেঙে নায়িকা হিসেবে নিজেকে গড়েছেন তিনি।
রুপন্তী ‘হিন্দি বিন্দি’ ও ‘বনলতা সেন’ সিনেমার বাইরে মাজনুর মিজানের মায়া জীবন নামে একটি নাটকে কাজ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি একজন পেশাদার আলোকচিত্রী। ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক করেছেন।
সূত্র:প্রথম আলো